বরগুনা জেলার স্টেডিয়ামে এক কনসার্টে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদ্যপ্রয়াত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে কথা বলতে কেঁদে ফেলেন জেমস।
আইয়ুব বাচ্চু কে হারিয়ে শোকে বিহ্বল দেশ। উপমহাদেশের অন্যতম সেরা গিটারিস্ট আইয়ুব বাচ্চু। দেশের সঙ্গীত অঙ্গনও আইয়ুব বাচ্চু কে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান। এই শিল্পী বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তি। আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন বাংলা ব্যান্ড কে জনপ্রিয় করার অন্যতম কারিগর। আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে সমসাময়িক শিল্পী সহ ব্যান্ড জগতের শিল্পীরাও শোকে মুহ্যমান।
জেমস বরগুনার একটি কনসার্টে আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে তার স্মৃতি ঝাঁপিয়ে তোলেন। মঞ্চে উঠে ভারাক্রান্ত জেমস বলেন, জনপ্রিয় গায়ক আইয়ুব বাচ্চু আর নেই। আজকের অনুষ্ঠানটি করার একদম ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু ১৫ বছর আগের একটা গল্প বলি। আমি আর বাচ্চু ভাই আড্ডা মারি; একদিন আসতে আসতে বাচ্চু ভাইকে বললাম আমাদের শিল্পীদের জন্য ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, দ্য শো মাস্ট গো অন (The Show Must Go On)। তাই চেষ্টা করব। জেমস যখন এই কথাগুলো বলছিল তখন তার গলা ধরে আসছিল। তিনি কনসার্টে কান্নাজড়িত কন্ঠে গান গেয়ে শোনান।
বরগুনা জেলার স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেই কনসার্টটি জেমস উৎসর্গ করেন সদ্যপ্রয়াত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুকে।
১৯৮০ সালের শুরুর দিকে আইয়ুব বাচ্চুর সাথে জেমস এর পরিচয় হয়। এরপর চলতে থাকে দীর্ঘ ৪০ বছর এর সম্পর্ক। বিকেলে জেমস কনসার্ট এ যোগ দেয়ার আগে বলেন, এই দীর্ঘ সময় আমরা একে অপরের সুখে-দুখে মানে-অভিমানে কাটিয়েছি। আমরা একসাথে প্রচুর গান করেছি, অনেক শো করেছি, দেশ-বিদেশে ঘুরেছি। তিনি হঠাৎ আমাদেরকে এভাবে ছেড়ে চলে যাবেন, এটা সত্যি মানা যায় না। এই খবরটা আমরা কেউই মানতে পারছি না। রকসঙ্গীতে তার যে অবদান, এই জাতি চিরদিন সেটা মনে রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।
জেমস বলেন বাচ্চু ভাই অত্যন্ত উদার মনের মানুষ ছিলেন। বাচ্চুর সাথে আমার যে সম্পর্ক, সেটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। বিভিন্ন সময়ে আমরা একে অপরের পাশে কারণে-অকারণে একত্রিত ছিলাম। তার আর আমার এ গভীর সম্পর্কের উদারতা কখনোই বোঝাতে পারবো না। আমাদের একের হৃদয় অপরের জন্য যে কতটা জায়গা রয়েছে তা হয়তো কেউ কোনদিন জানবেও না। একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা ছিল আমাদের মধ্যে। আর সেটা ভালো গান তৈরির প্রতিযোগিতা। সেখানে কোন ঈর্ষা ছিল না। যখন যেখানে দেখা হতো দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরতাম ভালোবাসার টানে।