দুর্নীতি এক মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন ৮ মাসের মাথায় আরেক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে । জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গতকাল সোমবার ওই দণ্ড সহ ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫।
এই মামলার আরো তিন আসামি রয়েছে । তাদের প্রত্যেককে ও ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এবং প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে । কাকরাইলে কেনা ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে রাষ্ট্রের অনুকূলে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে।
লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগের মামলায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধভাবে মামলায় রায় দেয়া হয়েছে । পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে গতকাল দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।
সাজাপ্রাপ্ত অন্য তিন আসামি হলেন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান, তাদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী শুরু থেকে পলাতক। আর অন্য দু'জন কারাগারে আছেন।
আদালতে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে বলেন, রাষ্ট্র সর্বোচ্চ পদে আসীন থেকে ভবিষ্যতে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ এ জাতীয় অপরাধ করতে না পারে সে জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন । খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য আসামিদের সহযোগিতায় বিএনপিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে ব্যক্তিগত ট্রাস্টের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ এনেছেন এ বিষয়ে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন রাষ্ট্রপক্ষ।
পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের নামে কেনা জমি বাবদ জমির মালিক হিসেবে সুরাইয়া খানমকে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। জমির বাজার মূল্য ওই পরিমাণ না হলেও জমির মালিক তারেক রহমানের চাচাতো শাশুড়ি হওয়ায় তাকে লাভবান করতেই ওই টাকা দেওয়া হয়েছে।
খালেদার বিরুদ্ধে আরো মামলা, দুর্নীতি নাশকতা, মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রয়েছে। আরও অন্তত ৩৪ টি মামলা, মামলাগুলো ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের মধ্যে করা। এসবের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা ও নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আগামী মাসে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষ জজ আদালত এ দিন ধার্য হয়েছে।
ড্যান্ডি ডাইং এর প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ঋণখেলাপের মামলার আসামি আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ায় অংশীদারি সূত্রে তার মা খালেদা জিয়াকে বিবাদী করা হয়েছে। এই মামলা বিচারাধীন অবৈধ সংক্রান্ত সম্পদ সংক্রান্ত মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে এ মামলাটি ২০০৮ সালে করা হয়েছে।
২০১৬ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কারণে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি মামলা করেন। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদি মখালেদা জিয়া এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছেন। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এনে আরো একটি পিটিশন মামলা করা হয়।
বিএনপির ডাকে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে অবরোধ-হরতাল চলাকালে সারাদেশে যানবাহন, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমা বিস্ফোরণ ও নাশকতার ঘটনা ঘটে। খালেদা জিয়াসহ এসব ঘটনায় বিএনপি'র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ২৫ টি মামলা হয়।
Ahare
ردحذف