আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র হাড্ডাহাড্ডি লড়াই


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সাতক্ষীরা জেলায় রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি । এছাড়াও এর বাইরে রয়েছে জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীরা কর্মীসভা শো-ডাউন সহ নির্বাচনী সভা সমাবেশে মাতিয়ে তুলেছে পুরো জেলা। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলার চারটি আসনের সংসদ সদস্যরা আবারো তাদের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বলে প্রচারণা চালালেও তৃণমূলের কর্মীদের কাছে এখনো তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। এটা সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন।

সাতক্ষীরা-১ (তালা কলারোয়া) আসনের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা বর্তমানে পুরোপুরি নির্বাচনী মেজাজে আছে। চলছে তুমুল তর্ক-বিতর্ক দলের মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়ার হিসাব নিকাশ নিয়ে।

২৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা এক সংসদীয় আসন তালা ও কলারোয়া দুটি উপজেলার একটি ফৌরসভা। স্বাধীনতার পর থেকে জামায়াতের অ্যাডভোকেট শেখ আনছার আলী ও জাতীয় পার্টি এরশাদ সৈয়দ দিদার বখত দু'বার বিএনপি'র প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব জয়লাভ করেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।

জেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী মজিবুর রহমানের কাছে গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন । আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ প্রার্থী করা হলে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি জয়লাভ করেন।

মহাজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। এ আসনে বিএনপি জামাতের উপর ভর করে আর ওয়ার্কার্স পার্টি আওয়ামী লীগের উপর ভর করে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কারণে আসনটি হয়ে উঠেছে জোট নির্ভর । এই আসনটিতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোটের হার প্রায় সমানে সমান। এ আসনটি পুনরুদ্ধারে বিএনপি ও জামাত হারানো চেষ্টা চালালেও নেতাকর্মীদের নামে মামলার কারণে গত চার বছরে তারা কোনো কার্যক্রম চালাতে পারেনি।

আমি লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন বর্তমান উপজেলা এ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন।

সাতক্ষীরা-২ সদর আসনে স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ দুবার নির্বাচিত হলেও আসনটি জামায়াতের ঘাঁটি। আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করেন। এবারও এরই ধারাবাহিকতায় চলছে এ আসনের হিসাব-নিকাশ।

সাতক্ষীরা সদর আসনে জামায়াতের দুর্গ হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ। জোটের অন্তত ৬ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় আছেন। ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে একটি পৌরসভা গঠিত। সাতক্ষীরা সদর ৩ আসনে মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এ আসন থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন নিয়ে জয়লাভ করেন। তিনি বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
এছাড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম শওকত হোসেন মনোনয়নপ্রত্যাশী। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করে আসছেন । তিনি দলের দক্ষ সংগঠক সৎ ও কর্মী বান্ধব হওয়ায় যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন। এসব কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ও যথেষ্ট।

সাতক্ষীরা জেলার সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মনোনয়ন প্রত্যাশী । ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছেন। তবে সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এরশাদ উজজামান বাবু অধ্যক্ষ আবু আহমেদ ও ড. এরতেজা হোসেন ও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

অন্যদিকে এ আসনে বিএনপি'র পৌর মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতি কে একক প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছেন দলের জেলা পর্যায়ে অনেকেই।

মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য ও নুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জি এম বকতিয়ার আহমেদ ও কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদী নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন।

অন্যদিকে এ আসনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি'র সাবেক সাধারন সম্পাদক সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী।

আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রচারে নেমেছেন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা। এছাড়াও তিনি এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। মহাজোটের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী হয়ে মাঠে আছেন আব্দুস সাত্তার মোড়ল তিনি অনেক আগে থেকেই প্রচারে নেমেছেন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post