ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কারাগারে

৪০ জন বন্ধুর সঙ্গে সাধারণ ওয়ার্ডে

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে মানহানির মামলায় গ্রেফতার হওয়ার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অাদালতে হাজির করা হয়। আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার রংপুর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে। কারাগারে পাঠানো হয়েছে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

গতকাল মঙ্গলবার তাকে হাজির করার পর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করা হয় ব্যারিস্টার মইনুলকে। ঢাকার কেরানীগঞ্জের কারাগারে নেয়ার পর সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। ওয়ার্ডে বিকেলে তিনটার দিকে মঈনুলকে যখন নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেখানে বন্দী ছিলেন ৩৫ জন। আর ওই ওয়ার্ডটি আমদানি ওয়ার্ড নামে পরিচিত। ওই ওয়ার্ডে চেয়ার কিংবা খাটের কোন ব্যবস্থা নেই।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলামের আদালতে শুনানি হয়। মইনুল হোসেনের পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন। ঢাকা মহানগর পিপি রাষ্ট্রপক্ষে আবদুল্লাহ আবু অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল সহ বেশ কয়েকজন সরকারি আইন কর্মকর্তা জামিনের বিরোধিতা করেন। অন্যদিকে অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু এবং সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন। আইনজীবীরা মইনুল হোসেনের পক্ষে আদালতকে বলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। তিনি জামিন পেলে পালাবেন না। এছাড়াও আইনজীবীরা আরো বলেন, এ মামলার ধারা জামিনযোগ্য। উচ্চ আদালতের বহু সিদ্ধান্ত রয়েছে জামিনযোগ্য ধারার জামিন দেওয়ার জন্য। এছাড়া আইনে বলা আছে জামিনযোগ্য ধারার মামলা আদালত জামিন দেবেন।

মইনুল হোসেনের আইনজীবীরা বলেন, রংপুরে যে ঘটনায় কেন্দ্র করে মামলাটি করা হয়েছে সেটি চলতে পারে না। কারণ মাসুদা ভাট্টি নিজেই একটি মামলা করেছেন। এছাড়া সারা দেশে কয়েকটি মামলা হয়েছে। তাই একাধিক মামলায় চলতে পারে না বলেও আইনজীবীরা উল্লেখ করেন। মহানগর দায়রা আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন মইনুল হোসেন একজন নারী সাংবাদিককে অপমান করেছেন। এবং তাকে চরিত্রহীন বলেছেন আর এটা গর্হিত অপরাধ। যে ধারায় মামলা হয়েছে তা জামিন যোগ্য হলেও জামিন দেওয়া না দেওয়া আদালতের। আর সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, তার দ্বারা পুরো নারী জাতি কলঙ্কিত হয়েছেন। মইনুল যে বক্তব্য দিয়েছেন দেশে একটা সেন্টিমেন্ট তৈরি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রংপুরে মামলাটি হয়েছে জামিনের আবেদন শুনানি সেখানেই হওয়া উচিত।

মামলাটি জামিনযোগ্য ধারা অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ আরো বলেন, পুরো জাতি স্তম্ভিত মইনুল হোসেনের বক্তব্যে। আদালত জামিন নাও দিতে পারেন । এসব বিষয় বিবেচনা নিলে আদালতের সামনে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন নিশ্চুপ ছিলেন । উভয়পক্ষ শুনানি করার সময় মইনুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে এ সময় আদালত জামিন মঞ্জুর করে।

গ্রেপ্তার সংক্রান্ত নথি রংপুর আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। দায়ের করা ওই মামলায় আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। গত সোমবার রাতে প্রশ্নই নেই আমার সাথে আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর আপনি। যে প্রশ্ন করেছেন মইনুল এ ধরনের বাক্য ব্যবহারে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন এর মধ্যে কয়েকটি তে।

মাসুদা ভাট্টি কে লাঞ্ছিত করেছেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। আদালতে এনে বিষয়টি তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০০/৫০১ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। অ্যাডভোকেট খরুল ইসলাম গুন্দু মামলাটি আদালতে আমলে নিয়ে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলাটি পরিচালনা করেন বাদী পক্ষে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল উর রশিদ আমিন সোহেলসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী।

ময়মনসিংহে মামলা করা হয় মইনুলের বিরুদ্ধে।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়েছে। গতকাল ভালুকা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মনিরা সুলতানা মনি। গতকাল মামলাটি দায়ের করেন ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করা হয় । আইনজীবী অ্যাডভোকেট বলেন আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তা সাইবার ক্রাইম আদালতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post